মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২০

কাগজের প্রেম

প্রথাগত বাস্তব জীবনের বাইরেও কতগুলি নারী চরিত্রের প্রেমে আমি পড়েছি। এদের দেখা মিলে বইয়ের পাতায়, অক্ষরে অক্ষরে পাতার পরতে পরতে সাজানো থাকে তাদের অবয়ব। মনের একটা অংশ জুরে থাকা এই চরিত্রগুলো শুধু আক্ষেপই বাড়িয়ে দিতে পারে।

প্রিয়াংকাঃ আমার প্রথম প্রেম প্রিয়াংকা। জাফর ইকবাল স্যারের "আমি তপু" বইটা পড়ার পর প্রিয়াংকার মত এমন একজনকে পেতে বারবার নিজেকে কঠিণ সময়ে থাকা তপুর জায়গায় ভাবতে ইচ্ছে করে। স্রোতের বিপরীতে চলা প্রিয়াংকা আমার কিশোর মনকে নাড়িয়ে দিয়েছিল ভীষণভাবে। আজও কারো সাথে পরিচিত হওয়ার সময় প্রিয়াংকা নাম বলে হৃদয়ের বিট একটু হলেও নড়ে ওঠে।

রূপাঃ হুমায়ূন আহমেদ রুপার প্রেমে আমি ছাড়াও যে কতজন পড়েছে তার হিসাব নাই করা হল। মাঝে মাঝে হিমু হওয়ার স্বাদ জাগে কিন্তু নীল শাড়ী পড়ে রূপা অপেক্ষা করে আছে ভাবতেই ইচ্ছে হয় সব কিছু ছেড়ে দিয়ে রুপার কাছে গিয়ে বলি, "তোমার প্রতীক্ষা শেষ রুপা, চল তোমার অশ্রু দীঘিতে স্নান করে আমি হিমু হওয়ার সাধনা ত্যাগ করব। বাকীটা জীবন দুজনে একসাথেই হাটব।" যদিও আমি নিশ্চত বদলে যাওয়া হিমুকে রুপা আর সহ্য করতে পারবে না।

রাকাঃ সুনীলদার রাকা বইটা যতবার পড়ি, রাকার জীবনে নিজেকে আবিষ্কার করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু বইটি এমনভাবে লেখা যে নিজেকে কোথাও জায়গা দিতে পারিনা। বেশ কজন পুরুষ রাকাকে ছুয়ে যায় কিন্তু কেউ স্থায়ী হতে পারেনা। আমিও পারবনা। আমার কাছে রাকা একটা ঘোরের মত। নেশা ধরিয়ে দিয়। মোহ বা নেশা কেটে গেলে, সেও কেটে যাবে।

মার্গেরিটঃ এটা সুনীলদার জীবনীতে পাওয়া বাস্তব একটা চরিত্র হলেও আমার কাছে মায়ার মত। মার্গেরিটের প্রেমে পড়ে আমি যেন সকল ফরাসী মেয়েরই প্রেমে পড়ে গেছি। মার্গেরিটের ঠিকানা আমি হাইলাইট করে রেখেছি। স্টাচু অব লিবার্টি কিংবা আইফেল টাওয়ার নয়, যদি কখনো আমেরিকা যাবার সুযোগ হয় তবে মার্গেরিট অ্যাওয়ারা নামের যে শহরটিতে কাজ করত সে শহর আর তার ফরাসীতে থাকা তার বাড়ি অবশ্যই দেখে আসব।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন