দুই হাজার এক বা দুই সাল।
বাবা কোথাও বেড়াতে যাবেন। আমি কৌতুহলী হয়ে জিঙ্গাসা করলাম যে তিনি কোথায় যাবেন। আমাকে অতিকৌতুহলী দেখে তিনি বললেন, প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া (পৈত্রিক ভিটা) পরে চট্টগ্রাম সেখান থেকে বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী হয়ে সবশেষে ঢাকা থেকে সিলেট। তখন সারাদেশ ভ্রমন করার কথাটা তিনি এমনিতেই বলেছিলেন। তখন কে জানত এই কথাটা আমার স্বপ্নের বড় একটা অংশ দখল করে নেবে।
এই স্বপ্নের পিছনে ছুটতে গিয়ে সুরমা-কুশিয়ারা ছাড়াও দেখা হয়েছে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, কর্ণফুলী, মধুমতী, ধানসিঁড়ি, আত্রাই, ব্রহ্মপুত্র, ভৈরব মত দেশের মোট নদীর অন্তত দুই তৃতীয়াংশ। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দের মত আমিও দেশের অন্য প্রান্তে থাকা প্রেয়সী নদী রুপসার রূপে মাতাল হলাম। কি অপরুপ, অম্লান তার যৌবন!
সবকটি বিভাগ আর পঞ্চাশটির মত জেলা।
কখনো এক গম্বুজ, কখনো নয় গম্বুজ আবার কখনো ষাট গম্বুজ দিয়ে সাজানো খান জাহান আলীর বানানো জগৎ থেকে মহারাণী হেমন্ততকুমারীর রাজভবন। কুষ্টিয়ায় সুফি সাধক লালন শাহ, চাদপুর ত্রিমোহনা, প্রাচ্যের ভেনিসখ্যাত বরিশাল, কাজী নজরুলের ত্রিশাল (ময়মনসিংহ), ময়নামতির কুমিল্লা, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, রাজবাড়ি, নগরভবন, বগুড়ার দই, অ্যালেন গিন্সবার্গের যশোর রোড.... দেশের পরতে পরতে ছড়িয়া থাকা কত শত ছোট ছোট গল্প। তবে বড় পল্টিটা ছিল রাজনীতে বিভিন্ন সময় পল্টি নেওয়া এরশাদ স্যারের রংপুরে। স্টেশনে নেমেই দেখি মানিব্যাগ খালি। ফেরার পয়সাও নেই। ট্রেনের দরজায় কোনক্রমে গদাগদি করে এসেছি আমি আর মাহদী। টি.টি এলে বাথরুমেও আশ্রয় নিয়েছি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন