শনিবার, ১৬ মে, ২০২০

লিলি ডে

ভর্তি পর্বের কয়েকদিন পরের কথা, প্রথম দেখাতেই ক্রাশ খেলাম বন্ধুর গার্লফ্রেন্ড লিলিকে দেখে। কোন এক দীর্ঘ সূত্রে সে আমার আত্মীয়ও হত।
 
কোম্পানীগঞ্জ থানা সদর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে অধ্যয়ন করেছি দুই বছর সাড়ে আট মাসের মত। টপারদের তালিকায় কখনো না থাকলেও টপ-টেনের একজন ছিলাম। বছরখানেক পর, বাড়ি থেকে প্রতিদিন চার কিলোমিটার আসা যাওয়ার জামেলা এড়াতে বাসা নেই কোম্পানীগঞ্জ থানার পাশে। পড়াশোনা আর আড্ডায় দিনগুলো বেশ কেটে যেত। ক্লাসের নয়ন, রুমী খালা, শাহাবউদ্দিন ভাই মিলে শুরু হওয়া আড্ডাগুলা এতই লম্বা হত যে, কোন কোন দিন নানীজান (রুমী খালার মা) এসে নিয়ে যেত তাকে।
 
একদিন সকালে দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে ঘুম ভাঙল।ছুটির ছিল বলে খানিকটা বিরক্তি নিয়েই উঠে বসলাম। দরজা খোলে আমি 'থ'। রুমী খালার সাথে দাড়ানো আমার সেই ক্রাশ। সকালে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলেই লিলিকে দেখা আমার জন্য স্বপ্নের মত একটা ব্যাপার।
অবাক হয়েছিলাম এই জন্য যে, লিলি খালার প্রতিবেশী হলেও এত ক্লোজ ছিল না। আমরা হাতে ব্রাশ নিয়ে হাঁটতে লাগলাম... হঠাৎই থানার সমানে যেতেই তার নজরে পড়ল ডোবায় ফুটে থাকা শাপলা ফুলের দিকে। শান্ত স্বভাবের মেয়েটি হঠাৎই উচ্ছলিত হয়ে উঠল। আমি থানার কাঁটাতারের বাঁধা জয় করে ডোবায় আঁকড়ে ধরে রাখা কান্ড ছিন্ন করে নিয়ে এলাম একটি ফুল। নগণ্য সেই ফুলে তার মুখ যেভাবে খুশিতে ভরে উঠেছিল সেটা সে হয়তো ভূলে যেতে পারে, আমি ভূলিনি।
 
সেদিনই রূমী খালা আমাদের তিনজনকে তিনটা বাহুবন্ধনী (ব্রেসলেট) উপহার দিয়েছিল। এগুলো ডায়েরিতে থাকরেও অতি গোপন ক্রাশ বলে সেদিনের কাহিনীটা তখন পহেলা নভেম্বর ২০১০ এর ডায়েরিতে পাতাতে লিখা হয়নি, কেবল পৃষ্ঠার এক কোনে স্টার চিহ্ন দিয়ে লিখা 'লিলি ডে'।


পরিশিষ্টঃ লিলি কিন্তু তার আসল নাম নয়।

মঙ্গলবার, ৫ মে, ২০২০

অদৃশ্য বন্ধন

- এখানে ঘন বৃষ্টি হচ্ছে।
-- আমার এখানে জুম বৃষ্টি নেই এখন, কমে গেছে
-আমি ভাবছি অন্য কথা।
তোকে ত্যাগ দিবো কি করে?
--ছেড়ে যাওয়াটা কি খুবই জরুরী?
--অদৃশ্য বন্ধনে জড়িয়ে গেছি
-আমি তো তোকে ছাড়তে পারব না
--আমাকে দিয়ে তুই কি করবি?
কিছুই তো পাবিনা।
-তুই যে আমার হৃদয়ের তৃষ্ণা…
--পান তো করে নিয়েছিস
-সে তো দেহের ক্ষুধা,
হৃদয়ের তৃষ্ণা তো অনন্তকালের
যেন হাজার বছর ধরে এমনই এক মানবীর জন্য অপেক্ষা করে ছিলাম।
--মনে আছে, প্রথম যেবার হাত ছুঁয়েছিলি?
-তুই কি তখন বুঝতে পারিসনি যে, কতটা চমকে উঠেছিল তোর হৃদয়?
পুরো আকাশগঙ্গা থেমে গিয়েছিল মুহুর্তের জন্য।
যেন এ অধরা স্পর্শের জন্যই ধরনীতে হাজারবার এসেছিলাম আমরা,
একে অপরকে খুঁজে ফিরেছি জন্মজন্মান্তরে।
-- আমার ভয় লাগে, তারপর আমি কি তোকে আর ছাড়তে না পারি…
যদি থেকে যাই?
- ছাড়বি না,
আমরা  তো এক হয়ে গেছি।
--আমার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।
- আরে পাগল, আমি তো সব কিছু তোর ইচ্ছের উপরই ছেড়ে দিলাম।
.
অদৃশ্য বন্ধন (কথোপকথন)

সোমবার, ৪ মে, ২০২০

নৈসর্গিক স্মৃতি

প্রিয়তমা, তুমি যদি বৃক্ষ হও
একে একে পাতা ঝড়ে শূন্য হয়ে থাক
তবুও তোমায় ভালবাসি ছাড়তে পারব না'ক।


তোমায় ত্বকে যেদিন দেখা যাবে অজস্র রেখা
শুভ্র চুল বয়সের ভাঁজে,
সেদিনও অন্য কারো ঘর থেকে দেখবে
আমার লুকিয়ে রাখা ভালবাসা,
হিমালয়ের খাঁজে


প্রেয়সী, মধ্যে রাতের প্রথম প্রহরে
আমায় করিয়েছ স্নান,
স্বর্গ সুখের নৈসর্গিক স্মৃতি
এখনো হয়নি ম্লান।

শনিবার, ২ মে, ২০২০

ত্রিভূজ

তুমি ভাবো তুমি অন্যকারো
অথচ আমি ভাবি তুমি আমার,
আসলে ভালবাসা একটা ভাবনা ছাড়া কি বা আর!
যদিও তুমি আমার নয়,
তবুও তুমি আমার।

দরজার ওপাশে প্রহর গুনছি,
তোমি এসে ডাকবে বলে
অন্য কারো নিমন্ত্রণে তোমি হারালে
আমার জন্য কেবল তোমি আর তোমার জন্য সে,
শূন্য হাতে দুজনই মোরা, কাকে দেবে কে?
.
কবিতাঃ #ত্রিভূজ

আমার মতই ভালবাসি

প্রিয়তমা,
তুমি যেভাবে ভালবাসা বুঝতে পার
হয়ত সেভাবে ভালবাসতে পারিনা।
কিন্তু আমি আমার মতই ভালবাসি,
হয়ত একটু বেশিই ভালবাসি তোমাকে।
.
ভালবাসি তোমার গায়ের দুর্গন্ধ
তোমার লুকিয়ে থাকা কলঙ্ক
তোমার নামের সাথে জড়িয়ে থাকা
প্রতি নিরর্থক কিংবা প্রগাঢ় শব্দ
ভালবাসি তোমার হাসি, তোমার কান্না
তোমার লুকিয়ে রাখা দুষ্টুমির ভান্ডার,
ফেলে দেয়া পেন্সিলের মুন্ডো, কাগজ ছিন্নভিন্ন,
ভালবাসি বলেই, এখনো সেই পুরোনো
টিলাগড় ইকো পার্কের স্মৃতিতে খোঁজি
তোমার ফেলে আসা পদচিহ্ন।