ছেলেবেলায় আমার নদী জমানোর শখ ছিল।
পদ্মা, মেঘনা, ফেনী, করতোয়া'র মত
তের নদী হয়ে গিয়েছিল।
সাত সমুদ্রও নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছিলাম।
সাত সমুদ্র তেরটি নদীর ওপার নাকি
আমার সেই রাজকুমারীর রাজ্য।
চতুর্দশেই পেয়ে গেলাম পার্বতীর দেখা।
ব্যাস, বোকার মত অমনি করে দিয়ে দিলাম
আমার সব সম্পদ।
বুঝতে পারিনি সে হবে অন্য কোন জমিদারের ঘরণী।
সেদিনের সব হারানোর আত্মচিৎকার
আজও ভূলিনি আমি।
একদিন দেখা পেলাম কয়েকটি কাঠপেন্সিল
আর পুরাতন এক তুলির দেখা
এগুলো দিয়ে নাকি স্বপ্ন আঁকা যায়।
আমি স্বপ্ন বুনতে শুরু করলাম
আর ভেঙে গেল পেন্সিল
নীল আলোয় রক্তাক্ত হল হৃদয়।
তারপর আমি হলাম কবি;
একালের উদ্বাস্তু।
অনেক খুঁজে একটি ছোট নদীর দেখা পেলাম।
রূপসা।
এই ছোট্ট নদীটাকে সাগর বানিয়ে
আমি নাম দিলাম রূপসাগর।
পণ করেছিলাম যাই হোক না কেন
এ নদী আমি কাউকে দিব না।
এ নদীটাকেও রাখতে পারলাম না,
একদিন প্রেমের দেবী আফ্রোদিতি এল
তাদের উপঢৌকন না দিলে মান কি আর রয়?
আমার কাছে এই নদীটি ছাড়া আর কিছু ছিল না তখন।
আমি ভীতসম্ভ্রমে খানিকটা অগোচরে তার বাহনে রেখে দিলাম।
সে যখনই টের পেল, ছুঁড়ে ফেলে দিল।
তার জন্য রাজকোষ উন্মুক্ত করে দিবে
এমন রাজকুমারের অভাব হবেনা জানি।
কিন্তু আর কেউ তার অতিপ্রিয় বস্তুটিকে উৎসর্গ করবেনা
সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।
আমার অতিপ্রিয় বিসর্জনও তার জন্য যথেষ্ট হবে না
সে আমি জানতাম।
তবুও জেনে শুনে আরও করা একটি ভুল।