প্রিয়তমা,
অসময়ে আর ফিরে এসো না।
কতগুলো শূণ্য প্রহরের ব্যাপ্তি
হারিয়ে যাওয়া মেঘের ভাঁজে সপ্তমীর চাঁদে
নগ্ন হৃদয়ে কৃষ্ণস্নান
তোমার প্রযোজনকে অস্তিত্বহীন করে তুলেছে।
.
হারিয়ে যাওয়ার পর কতগুলি ধসূর স্মৃতি নিয়ে
উষার আবির আর ঈষার তীক্ষ্ণ রক্তস্রোতের মাঝে
দুপুরের গগনবিদারী রোদে
এককাপ চা খাওয়ার দিনগুলো খারাপ ছিলনা।
মাঝে মাঝে কল্প ভ্রমে তোমিও বসে পড়তে আমার সাথে
.
আজ আর কোন কল্পলোকের তন্দা নেই
মাঝে ডাস্টবিন জুরে নিয়েছে ক্যালেন্ডারের একুশটি পাতা
সাক্ষাৎ দেবী দর্শন বহুকাল পরে।
কত দীর্ঘ এক রাতের পর
যেন আবার উদিত হয়েছে ভাস্কর।
সেই নীল শাড়ী, কাল টিপ, রেশমী চুড়ির কনকন
চোখে পড়ার মত কোন পরিবর্তনই নেই।
আগে শাড়ীতে এতটা অভ্যস্ত ছিলনা
সারাক্ষণই একটা উৎকন্ঠা কাজ করত
আজ আর সেটা নেই, সহজ সাবলীল।
শাড়ী পরাটাও যেন একটা আর্ট।
হাতের কনকন শব্দটাও যেন অনেকটা যান্ত্রিক
আগের মত অসময়ে বেজে ওঠেনা।
শ্যামবর্ণ তনু ফর্সা হয়েছে অনেকখানি
চোখদুটিতে সুক্ষ্ম কারুকার্য,
নিচের দিক কালচে ভাবটাও নেই।
স্পষ্ট দৃষ্টি, প্রশ্ন করে এখন আর লজ্জায় মুখ লুকায় না
অনেক সংযমী আর আত্মবিশ্বাসী
যেন চাইলেই এখন পৃথিবী জয় করে নিতে পারে।
.
আমি কি তাকেই ভালবাসতাম?
সময়ে ফেরে অসময়ে যে ভালবাসা ফিরে এসেছে
তাকে তো আমি ভালবাসিনি।
আমি তো সেই ষোড়শীকে ভালবাসতাম
যার চঞ্চল চোখ এক মুহূর্তেও স্থির থাকত না
নতুন শাড়ী পরে সামনে এসে
লজ্জায় বারবার মুখ লুকিয়ে নিত
সারাক্ষণই শাড়ী সামলাতে গিয়ে
হাতের চুড়ির কনকন ছন্দ
শ্রবন ইন্দিয়কে শুড়শুড়ি দিত
সারা পৃথিবী নিয়ে বিশাল সংশয় থাকত তার মাঝে।
.
আমি বদলে যাওয়া এই অষ্টাদশীকে কখনো ভালবাসিনি
হয়তো পারবও না।
তাকে হারিয়ে কষ্ট পেয়ছিলাম সত্যি
কিন্তু বদলে যাওয়ার কষ্ট তার সমকক্ষ নয়।
ফিরে এসো না আর প্রিয়তমা
সময় হারিয়ে, অসময়ে ভালবাসা নিয়ে,
আর কখনোই ফিরে এসো না।
.
.
কবিতাঃ_ফিরে_এসো_না_প্রিয়তমা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন