তখন তার বয়স কতই বা... চৌদ্দ কি পনের। জীবনের প্রথম মাহেন্দ্রক্ষণ, সেই প্রথম কাউকে ভালবাসি বলা। ঠিকভাবে বলতেও পারেনি, ছেলেটির চোখ বেয়ে নেমে আসা জলে হারিয়ে গিয়েছিল বাকী সবটুকু। কতই না আবেগ আর স্বপ্ন লুকিয়ে ছিল সেই নোনাজলে। না, সে নোনাজলের কোন মূল্য ছিল না বিপরীত পাশে দাড়িয়ে থাকা কুমারীর কাছে। সেই প্রথম পরাজয়ের পর অনেকটা সময় হারিয়ে গিয়েছিল কৃষ্ণগহ্বরের কালে।
তারপর দিন হাওয়ায় গা ভাসিয়ে সাথে নিজেও বদলে যায় কতকটা। তারপর এমনও এক সময় এল যখন মনে হত, কাউকে ভালবাসি বলাটাই বোধয় পৃথিবীর সবচে' সহজ কাজগুলির একটি। তারপর কতবার কতজনকে যে "ভালবাসি" বলছি তার হিসাবটা আর ডায়রিতে লিখেও হিসাবটা রাখা যায়নি। কাউকে নিয়ে পূর্ণতা পেয়েছে এক একটি ডায়রির সবগুলি পাতা আবার কেউ বা একটা কবিতার মাঝেই সীমাবদ্ধ। ধারাবাহিকভাবে অনেকগুলি নাম কিভাবে যেন লিখার পরও দু-একটি নাম বাদ পড়া আবিষ্কৃত হয়।
সেই সব ইতিহাসকে পেছনে আজ কারো সামনে দাড়িয়ে সে। না, সে জীবনে আসা আটদশটা মানুষের মত নয়। তাকে নিয়েই বাকী জীবনটা কাটিয়ে চায়। কল্পনায় সে ভাবে, এ আমার বধূ, শুধুই আমার। অথচ, কল্পনারূপী বধূ যখন হঠাৎই প্রশ্ন করে "ভালবাস আমায়?"
এক মুহুর্তের জন্য চুপ হয়ে যেতে হয়। বলতে গেলে গলা ধরে আসে। নিজের প্রতি লজ্জা হয়। না জানি জীবনে কতজনকে কথাটি বলা হয়েছে। কতই না সস্তা বাক্য। এ সস্তা বাক্য দিয়ে বিশেষ মানুষকে তো অপমান করা যায় না।
"আমি শীঘ্রই ঘরে বিয়ের কথা বলব।"
মাটির দিকে তাকিয়ে প্রসঙ্গ অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিতে হয়। অর্ধসত্য কিংবা মিথ্যা অনুভূতিতে জড়িয়ে পরা সে মানুষটি আজ সত্য বলতেও দ্বিধাবোধ করছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন