মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

কমলিফুল

খুজে চলেছি একটি ফুল,
ঠিক নিজের মত করে।
জাত-অজাতে নানা ফুল চলে এল সামনে।
গোলাপের ফুল বলল,
"আমি গোলাপ
ফুলের রাণী।
আমার সৌন্দর্যে ধরণী অভিভূত,
রাজ বিলাসিতার প্রতিক।
তোমি কি আমায় খুজছ?"
.
"না, আমি কোন যুবরাজ নই,
বিলাসিতা আমাতে হয় না।"
গোলাপ এবার ঐশর্য্য মেলে ধরল।
"গোলাপ ফুল তোমি সত্যিই সুন্দর।
কিন্তু এ আমার জন্য নয়"
গোলাপফুল তার অভিজাত্যে ধরে রেখে ফিরে গেল।
গন্ধরাজও তার সহচর।
.
তারপর সামনে এসে দাড়াল রজনীগন্ধা।
অতি সাধারণ দেখতে।
ভালই লাগল।
বলল, "দিনে আমাকে এরকম সাধারণই দেখায়
কিন্তু, রাতে আমি নিজেকে বিকশিত করি।
গন্ধে মাতাল হয়ে সবাই পতঙ্গের ন্যায় ছুটতে থাকে।"
.
"না, আমি চেয়েছিলাম সাধারণ একজন,
যে সর্বদা একই রূপে ধরা দেবে।"
যদিও সে এখন মিনতি করছে
আমি বেলা পড়ে এলে সে আর আমার থাকবে না।
তাকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখার ক্ষমতা আমার নেই।
হাছনা-হেনা, বকুল, জুই...
এরা কেউ এমন নয়,
যেমনটা আমি চাই।
.
আমি হাটতে হাটতে চলে এলাম
কোন এক অর্ধমৃত নদীর তীরে।
নদীর অববাহিকায় সারি সারি কমলি গাছ।
কতগুলি সবুজ পাতার ফাকে একটি কমলি ফুল
বাতাসের স্রোতে একটু উকি মেরে
আবার নিজেকে আড়াল করে নিচ্ছে
এই তো সে।
তাকেই তো আমি খুজছি।
ঠিক এমন একজন
যেমনটা আমি চাই।
বললাম, "এত লজ্জা কি তোমার?"
বলল, "লজ্জাই তো আমার অহংকার"
বললাম, "হে কমলিফুল, তোমি কি আমার হবে?"
কমলিফুল কোন রকমে এক পলক তাকিয়ে বলল, "জানিনা"।
বেচারী আবার সবুজ পাতার আড়ালে চলে গেছে।
বড্ড লাজুক ফুল।
এই তো সে।
তাকেই তো আমি খুজছি।
ঠিক এমন একজন
যেমনটা আমি চাই।
হে কমলিফুল, "আমি তোমাকে ভালবাসি"।

শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

তোমার জন্য একটুখানি

তোমার জন্য কিছুই করিনি।
তোমার অজান্তে অল্প-সল্প করেছি।
আচ্ছা ধরে নাও,
একটুখানি করেছিই তোমার জন্য
হৃদয়ে ছোট একটি কুঠি সাজিয়েছি
তবে,  আরও একটুখানি করতে চাই তোমার জন্য।

কি করা যায় বলতো?
ঐ কালো হাতটি কেটে দেই?
যে হাতটি তোমার হাতটাকে একবার ধরে
একটা সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন দেখিয়ে
তারপর সময়ের প্রয়োজনে
আবার ছেড়ে দিয়েছিল।

আর কি করা যায়?
ঐ কালো হাতের লাল রক্ত দিয়ে
মেহেদী পড়িয়ে দেই তোমার হাতে
পায়ে পড়িয়ে দেই আলতা
আর সিথিতে লাল সিঁধুর
শোন।
সিঁধুরের লাল আসবে কিন্তু আমার হৃদয় থেকে।
মেহেদী হাতে, আলতা পায়ে আর লাল সিঁধুর পরে
তোমি এক হাজার বছর বাস করবে
আমার হৃদয় কুঠিতে।
শুধু আর এতটুকুই না হয় করি তোমার জন্য।

#AH_Kawsar
Feb 14, 2017

বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

নিসঃঙ্গ গ্রহচারী

হেটে চলেছি আমরা ক'জন
কৃষ্ণগহ্বর থেকে মঙ্গলীর পৃষ্ঠতলে
আমরা কজন একসাথে
তবুও নিঃসঙ্গ প্রতিজন।

কোন এক প্রারম্ভিকতার কালে
আমি আটকে গিয়েছিলাম শনির বলয়ে
আমি ছুটছিলাম পরিবৃত্তের শেষ স্পর্স বিন্দুটি ধরে
তখন আমার টগবগে গরম রক্ত
হঠাৎই সেই গরম রক্তের অনুভূতিহীন হৃদয় পেয়েছিল
একটুখানি সিক্ত স্নিগ্ধতার ছোয়া।
উদ্ভিদের চারার মত তরতর করে বেড়ে উঠে
কতগুলি অর্থহীন স্বপ্ন।
কতগুলি লাজুক চাহুনি হৃদয়ে দোলা দিতে লাগল
আমি ছুটছিলাম সে স্পন্দনের ছন্দেই।

কালের পরিক্রমায় একদিন দেখি
ছন্নছাড়া সূর্য নামের নক্ষত্র।
একটা মহাজাগতিক ঝড়
শুক্র, বুধ, বৃহস্পতিতে অস্থিত্বহীনতার যুদ্ধ।
ছিটকে পড়লাম অন্ধকারে
সেই কৃষ্ণগহ্বরের এক বিন্দুর সাথে
ছোট একটি কণিকা হয়ে মিশে গিয়েছিলাম আমি।

কোন এক অজানা রহস্যময়ী হাসিতে
স্ফীত হতে থাকে সে শ্যামা বিন্দুটি।
বলুনের মত ভাসতে ভাসতে
অবতরণ করি অজানা এক গ্রহে।
এখানে আছে আমার মত আরও কয়েকজন।
সময় আর হৃদয় খুইয়ে ফেলা কতগুলি দেহ।
এই গ্রহটিরও দুটি উপগ্রহ আছে
ঠিক যেন মাধুরীর ঐ দুটি চোখ।
আমরা তার নাম দিলাম মঙ্গলী।
...
হেটে চলেছি আমরা ক'জন
কৃষ্ণগহ্বর থেকে মঙ্গলী পৃষ্ঠতলে
আমরা কজন একসাথে
তবুও নিঃসঙ্গ প্রতিজন।

#কবিতাঃ_নিসঃঙ্গ_গ্রহচারী
#By_AH_Kawsar
12.17.55pm February 11, 2017