_________________
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি
রক্ত রঙে লাল হয়ে আছে কৃষ্ণচূড়ার ডাল।
আমি অবাক হয়ে হাটতে থাকি...
আজকের সকালটাকেও মনে হয় নতুন,
আর কয়টা দিনের চেয়ে আলাদা।
আমগুলি হঠাৎই পরিপক্ব হয়ে গেছে।
কাঠালগুলিও।
ব্যাপার কি?
গতকালই তোমাকে দেখেছিলাম
চৈত্রসংক্রান্তিতে ঘরদোর ঝেড়ে
কৃষ্ণকায় হয়ে গিয়েছিল সেই শ্যামা মুখ।
তবুও এক তিলেক হাসি রাঙিয়ে দিচ্ছিল
বসন্তের শেষ বিকালটিকে।
আমি হাটতে হাটতে তোমার সামনে চলে এলাম।
লাল শাড়ী-চুড়ি-টিপ আর
সিধুঁরের অপূর্ব মিশ্রণ।
ছোট ছোট ঘামের বিন্দু তোমার সারা মুখে ছড়িয়ে আছে।
সেই ঘামের বিন্দু...
সে তো শুধু শ্যামা মুখের সৌন্দর্যই বাড়িয়েছে।
আমি স্থব্দ।
কোন অলৌকিক মোহে নয়।
তোমার সাবলীল সৌন্দর্যে।
এত রূপ তোমার।
আমি তিনশত পঁয়ষট্টিবার নিজেকে হারিয়ে একবার খুজে পাই।
এতক্ষণে আমার মনে হল আজ বৈশাখ।
বৈশাখ এসেছে তোমার শাড়ির আচল ধরে।
তোমি লাল শাড়ি পড়েছ বলেই
বৈশাখ ফিরে পেয়েছে তার প্রাণ।
তোমার চুড়ির রঙে রাঙাল
কৃষ্ণচূড়ার সবকটি হাত।
কিন্তু এখানেই তো শেষ নয়।
তোমার কালকেশে নিমিষেই রঙ বদলাল আকাশ।
কালবৈশাখী ঝড় নেমে এসেছে ঈষান কোনে।
কখনো বা বিদ্যুৎ ঝলকানি,
কখনো বা কুলনাশা তান্ডব
চলতেই থাকবে।
এই তো তোমি।
এই তো তোমার বৈশাখ।
কখনো ভাসাবে, কখনো হাসাবে
কখনো জাগাবে প্রেম।
আমি আবারও হাটতে থাকি পিছু।
আমি আর তোমি।
তোমি আর আমি।
পথে কখনো বর্ষা, কখনো শীত।
হেমন্তের সোনালী মাঠ আর
শরতের কাশবন ধরে আমরা হাটতেই থাকি।
চৈত্রসংক্রান্তি শেষে আরও একবার
লাল শাড়ী পড়বে তোমি।
আর সেই শাড়ির আচল ধরে
চলে আসবে আরও একটি বৈশাখ।
★★★
রচনাকালঃ পহেলা বৈশাখ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ।