শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

যুগ-যুগান্তরে অধরা স্পর্শ

গত চব্বিশ বছরেও সে হিসাবটা মিলাতে পারিনি। সেই বোধ হবার আগেই অবোধ এক ভাললাগা, সৃষ্টিজগৎকে নতুন করে দেখার দৃষ্টিকোণ খুজে পাওয়া। প্রতি দিনের সূর্যস্নান আর আধারের আবগাহনে দিন, মাস আর বছরের সংখ্যা বদলের সাথে একটু একটু করে বাস্তবের সাথে পরিচয়। এ বাস্তব আমার শৈশবের মত এত সহজ সরল নয়।

বহু ধরনের নিয়ম-কানুন, আচার-কালচারের সাথে নিজের আবেগগুলিকে যেন হঠাৎই একটা কারগারে আবিষ্কার করতে শেখায়। সে কারাগার সবার দর্শনের জন্য উন্মক্ত নয়। আমিও সে কারগারে এক যুগ নিজেকে আর নিজের কতগুলি নিষ্পাপ অনুভূতিকে বন্ধি করে রেখেছিলাম।

হঠাৎ কোথা থেকে যেন বসন্তের একটা পাগলা দমকা হাওয়া দুজনকেই স্পর্শ করে যায়। ক্ষণিকেই মাঝেই আবার মনে হয়; না, এ অনিয়ম, অনাচার, অসামাজিক। ফিরে আসি সেই পুরোনো কারাগারে।

তারপর না জানি জীবনে কত বসন্ত এসেছে। কতবার সে বসন্তের স্পর্শ তনুকে শিহরিত করেছে। কিন্তু এত সব অনুভূতি কখনোই সে স্পর্শের মত পবিত্র নয়। সময়ের পরিক্রমায় তার হাতে লেগেছে মেহেদী, পায়ে আলতা। আমার কাছে সেই সময়টাও ছিল স্বাভাবিক। এটাই ছিল নিয়ম, আচার।

তারপর যা ঘটনা ঘটে তার ব্যাখ্যা দিতে পারে কেবলই স্বয়ং প্রকৃতিকর্তা। সেই হাসি, সেই চোখ। যেন সেই অধরা স্পর্শ? নতুন করে অন্য কারো মাঝে অধরা স্পর্শে ছোয়া। যেন এক অলিক স্বপ্ন। এ স্বপ্ন তো আমি জেগে দেখেতেও ভয় পাই। না, এবার আর কোন অনিয়ম, অনাচার কিংবা অধর্ম নয়। এবার তো আর কোন কারগারে অনুভূতি বন্ধি করে রাখা অপ্রয়োজনীয়। যেন সনাতনী মতের নতুন এক জন্মান্তর ঘটেছে এক জনমেই। সময়,.... সময়ের বদলায়, আমি আরও একটি জন্মের ব্যার্থতা আবিষ্কার করি। খুব বেশি কিছু না বুঝলেও এতটুকু বুঝতে বাকী থাকে না যে সেও আমার নয়। সেও একজন অধরা স্পর্শ। অধরা স্পর্শরা নিষ্কলঙ্ক,  নিষ্পাপ, এদের কখনো স্পর্শ করা যায় না।

আমি এ পথ থেকে ও পথে ঘুরি। এ জায়গা থেকে ও জায়গা। বই থেকে উইকিপিডিয়া। ত্রিপিটক থেকে ত্রিকোণমিতি। শুধু একটি প্রশ্নের উত্তর খুজে বেড়াই। সে প্রশ্নটা আমাকে ঘুমাতে দেয় না। আর কোন বসন্তেই স্থির হতে দেয়না।

"অধরা স্পর্শ সে তো কখনোই আমার নয়। তবে ঠোটের কোণে এক চিলেক হাসি আর চোখের গভীরে এত মায়া নিয়ে কেন দেখা দিল?"