সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬

ভাষা ও বিকৃতি

ফেব্রুয়ারি এলেই আমরা ভাষার মাস বলে ঝাপিয়ে পড়ি। ভাষা গেল ভাষা গেল বল চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায়। বাকী এগার মাস যেন ইশারা-ইঙ্গিতের মাস।

কতক সূধীবৃন্দ বাংলার সাথে অন্য ভাষার মিশ্রণকে অলঙ্ঘনীয় পাপ মনে করে (যদিও বেশির ভাগেরই সন্তানদের কিন্ডারগার্টেন বা ইংলিশ মিডিয়ামে অধ্যয়নরত)। এক ভাষার সাথে যদি অন্য ভাষার মিশ্রণ না ঘটত তবে বাংলা ভাষার জন্মই হত না। বাংলা ভাষা হল প্রাকৃত ভাষার মাগধী রূপ। সংকৃতি ভাষাকে সাধারণ মানুষ বিকৃত করেছে বলেই বাংলা ভাষার জন্ম হয়েছে।

বাংলা শব্দ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে সেখানে
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জাতি দারা নিয়ন্ত্রিত, প্রভাবিত বা অধিকৃত হওয়ার কারণে আরবি, উর্দু, ফার্সি, পর্তুগিজ, ইংরেজী শব্দগুলি বাংলা শব্দভান্ডার শুধু বৃদ্ধিই করেনি ভাষার মাধুর্যতাও বৃদ্ধি করেছে।

ভাষাবিদদের মতে প্রত্যেক ১০ কি.মি অন্তর অন্তর ভাষার পরিবর্তন ঘটে। সেগুলো কি তাদের মাতৃভাষা নয়? মাতৃভাষা মানে বাংলা একাডেমিতে সংরক্ষিত বাংলা ভাষা নয়। ভাষাকে কখনো পুস্তকে আটকে রাখা যায় না, যদি যেত তবে হস্ত থেকে হত্থ হয়ে আজকের হাত হত না।
সোজাভাবে বললে মায়ের ভাষা বলতে মায়ের মুখের নিঃসরিত অর্থবোধক ধ্বনি। আমাদের মায়েরা আজকাল ভালই ইংরেজী ভাষা জানেন। তাদের মুখ থেকে শুনে শিখা ভাষাটা কি আমাদের মাতৃভাষা না? আমি আগেই বলছি ভাষার পরিবর্তনই ভাষার স্বাভাবিক রীতি, তাহলে কেন ভাষাকে আটকে রাখার এই মিথ্যা প্রচেষ্টা? আসুন না আরও কতগুলি শব্দ যোগ করি আমাদের মাতৃভাষার শব্দভান্ডারে।